বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন নিশ্চিত হয়েছে। দেশ-জাতি আবারও নতুন করে স্বাধীনতা পেয়েছে। অন্তর্বর্তীকালিন সরকার দেশকে সংস্কার করে নতুন নির্বাচনের জন্য কাজ করছে। কিন্তু ফ্যাসিবাদের পতন হলেও তাদের প্রেতাত্মারা দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে। বিভিন্ন মহল জাতিকে বিভক্ত করার নানান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। জাতীয় নেতৃবৃন্দের বক্তব্য বিকৃতভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে জনমনে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করছে। এ ব্যাপারে দেশ-জাতিকে সজাগ থাকতে হবে। ঘুষ, চাঁদাবাজী ও দুর্নীতিমুক্ত বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই জামায়াতের প্রধান লক্ষ্য।”
তিনি আজ ২১ সেপ্টেম্বর শনিবার সিলেট অঞ্চল জামায়াতের উপজেলা ও থানা আমীর-সেক্রেটারি শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সিলেট অঞ্চল পরিচালক এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের এর সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম এর পরিচালনায় শিক্ষাশিবিরে বক্তব্য রাখেন, সিলেট জেলা দক্ষিণের আমীর অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান, জেলা উত্তরের আমীর হাফিজ আনওয়ার হোসাইন খান, সুনামগঞ্জ জেলা আমীর মাওলানা তোফায়েল আহমদ খান, মৌলভীবাজার জেলা আমীর ইঞ্জিনিয়ার শাহেদ আলী ও হবিগঞ্জ জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা মখলিছুর রহমান, সিলেট অঞ্চল টীম সদস্য মাওলানা হাবিবুর রহমান ও হাফিজ আব্দুল হাই হারুন প্রমুখ।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “এদেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ সকল নাগরিকের অধিকার সমান। জামায়াত একটি বৈষম্যহীন ঘুষ-চাঁদাবাজী ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্য কাজ করছে। তাই জাতির প্রত্যাশা পূরণে জামায়াতের দায়িত্বশীলবৃন্দকে মাঠে ময়দানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। এখন জ্ঞান-বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তির উৎকর্ষ সধনের যুগ। তাই বৈশ্বিক জ্ঞান অর্জনে দায়িত্বশীলদের মনোনিবেশ করতে হবে। আমরা মানবতার কল্যাণ সাধন করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে চাই।”
তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার আদর্শিক মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়ে জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করেছিল। আমাদের জাতীয় নেতৃবৃন্দকে বিচারের নামে ফাঁসি দিয়ে শহীদ করেছে। শত শত নেতাকর্মীকে খুন-গুম করেছে। হামলা-মামলা, নির্যাতন-নিপীড়নের স্টীম রোলার চালিয়েছে। কিন্তু আমাদের দমিয়ে রাখতে পারেনি। সকল জুলুম-নিপীড়ন উপেক্ষা করে জামায়াত আর্তমানবতার কল্যাণে মাঠে ময়দানে সক্রিয় ছিল। তারা শেষ পর্যন্ত জামায়াত ও ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করার মতো আইন ও মানবাধিকার পরিপন্থী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা উত্তম পরিকল্পনাকারী। জামায়াত মাঠে ছিল আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশাআল্লাহ। অথচ বাকশালীদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। এখনো পালাতে হচ্ছে। আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই। আমরা হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চাই। এজন্য দেশপ্রেমিক জনতাকে জামায়াতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।”