বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এক বিবৃতিতে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সকল বিভাগ,মহানগরী, জেলা ও শিল্পাঞ্চলকে শ্রমিক সমাবেশ র্যালি, আলোচনা সভা, দুস্থদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, কর্মস্থলে আহত, নিহত ও পঙ্গুত্ববরণকারী শ্রমিক পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান,ব্লাড গ্রুপিং ও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি,সুবিধাবঞ্চিত ছাত্রদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, পোস্টারিং, লিফলেট ও স্টিকার বিতরণের মধ্যে দিয়ে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ১মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্য আহবান জানিয়েছেন।
গতকাল সোমবার দেয়া বিবৃতিতে তিনি ফেডারেশনের সকল শাখাসহ সর্বস্তরের শ্রমজীবী,পেশাজীবী ও ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন সমূহের প্রতি ১মে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্য আহবান জানিয়ে বলেন, ঐতিহাসিক ১মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সংগ্রামের প্রতীকি দিবস। বাংলাদেশসহ দুনিয়ার সকল অধিকার বঞ্চিত মানুষের লড়াইয়ে মে দিবস এক অনন্য প্রেরণা।
তিনি আরো বলেন, শিকাগোর সংগ্রামের ১৩৩ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও শ্রমিক তার মজুরি, কর্মঘণ্টা ও কর্মের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হচ্ছে। আমাদের দেশের শ্রমজীবী মানুষের রাষ্ট্রীয়,সামাজিক,অর্থনৈতিক কোনো ক্ষেত্রেই তাদের মর্যাদা বা অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। হয়নি জীবনযাত্রার মানের উন্নতি।শ্রমিক-কর্মচারীরা এখনো তাদের শ্রমের ন্যায্য মজুরি ও ন্যূনতম অধিকার থেকে বঞ্চিত।
তিনি আরো বলেন, শ্রমিক-কর্মচারীদের চাকরির নিরাপত্তার কোন নিশ্চয়তা নেই। নিরাপদ কর্মস্থানের অভাবে গার্মেন্ট, নির্মাণ, চামড়া শিল্প, ওয়েল্ডিং,চাতাল,পরিবহণ সহ অনেক কারখানায় দুর্ঘটনা ও শ্রমিক মৃত্যু এক নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। শ্রমিকরা সকালে ঘর থেকে বের হয়ে বিকেলে নিরাপদে ঘরে ফিরে আসবে তার কোনো নিশ্চয়তা এখনো নেই। আইএলও কনভেনশন ৮৭ ও ৯৮ মোতাবেক অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার দিলেও তা থেকে অনেক শ্রমিক-কর্মচারী বঞ্চিত। ব্যক্তিমালিকানাধীন শিল্প-কারখানা, অফিস ও প্রতিষ্ঠানে আইনগত বাধা না থাকলেও সেখানে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করতে দেওয়া হয় না। ।
তাই আজ আমাদের ভাবতে হবে শিকাগোর অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ১৩৩ বছর পেরিয়ে গেলেও শ্রমিক কেনো তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। কেনো আজও সেই আন্দোলন করতে হচ্ছে তাদের। প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীর যেখানেই শ্রমিকদের জন্য আইন তৈরি হয়েছে সেখানেই শাসক গোষ্ঠী তাদের স্বার্থ রক্ষা করেই আইন তৈরি করার চেষ্টা করেছেন। ফলে আইনের পোশাক পরে তারা বারবার কেবল ধোঁকাই দিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিকদেরকে।
শুধুমাত্র, শ্রমিকের অধিকারের ব্যাপারে ইসলাম যে রূপ রেখা দিয়েছে তা কিয়ামাত পর্যন্ত শ্রেষ্ঠত্বের আসনে থাকবে।কারন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা শ্রমিকের শরীরের ঘাম শুকাবার আগেই তার মজুরী দিয়ে দেবে। এর থেকে আর সুন্দর নীতি পৃথীবির মানুষের পক্ষে তৈরি করা সম্ভব নয়।যা শুধু দিতে পারে ইসলামী শ্রমনীতি।যে শ্রমনীতিই মূলত শ্রমিক ও মেহনতি মানুষকে দেখিয়েছিলো প্রকৃত মুক্তির পথ। শ্রমিক ও মালিকের সম্পর্ক এবং দুপক্ষের কর্তব্য ও অধিকার ন্যায়নীতি ও সমতার মাপকাঠি।
তাই তিনি অসহায় খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষদের উদ্ধারে ১মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের মধ্য দিয়ে শ্রমজীবী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নের শপথ নিতে শ্রমজীবী মানুষের প্রতি উদ্দাত্ত আহবান জানান।