ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতা, দলাদলি, সময়মতো কাঁচাপাট কিনতে ব্যর্থ হওয়া, দলীয় দৌরাত্ম্য, পুরাতন মেশিন ও দুর্নীতিরোধে ব্যার্থ হওয়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর পরিচালনায় সরকার ব্যার্থতার পরিচয় দিয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার পাটকল শ্রমিকদের মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন, বকেয়া বেতন পরিশোধসহ ১১ দফা দাবিতে, দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মসূচির সমর্থন জানিয়ে এক বিবৃতিতে তিনি এই কথা বলেন।
তিনি বলেন, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, দলীয় শ্রমিক নেতাদের দৌরাত্ম্য, পুরনো আমলের মেশিন- এরকম বেশ কিছু কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বহুকাল থেকেই লোকসান গুনছে। লোকসানের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। তিনি পাট মন্ত্রণালয়ের প্রাপ্ত তথ্যসূত্রে বলেন, গত অর্থবছরে লোকসান হয়েছে ৪৬৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে লোকসান হতে পারে ৬০০ কোটি টাকা। ভর্তুকি দিয়েই বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে এ শিল্পকে। এক দশকে এই পাটকলে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে ৭ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা।
তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনে (বিজেএমএসি) দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা ব্যাপক। তিনি পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিএসএস) তথ্য মতে বলেন , ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ কুইন্টাল পাট কেনা হয়েছে ৪ হাজার ৮১৯ টাকায়। অথচ ওই সময় বাজারে মূল্য ছিল কুইন্টালপ্রতি চার হাজার ৪১৬ টাকা। বিজেএমসির কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ফড়িয়াদের মাধ্যমে বেশি দামে মানহীন পাট সংগ্রহ করা হয় বাজার থেকে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার মনে করেন, রাষ্ট্রায়ত্ত পাট খাতকে টিকিয়ে রাখতে সাহসী এবং বড় ধরনের সংস্কার কর্মসূচি দরকার। প্রতিযোগিতামূলক রফতানি বাণিজ্যের জন্য আধুনিক সরবরাহ কাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন। আধুনিক মেশিনারিজ স্থাপন করে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। ক্রয়-বিক্রয়, আমদানি-রফতানিসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা বাণিজ্যভিত্তিক করতে হবে। পাটপণ্য উৎপাদনে কাঁচামালের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। মৌসুমে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে পাট সংগ্রহ করা বাধ্যতামূলক করতে হবে। পাট সংগ্রহের এই প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি বন্ধ সহ পাটকল শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বকেয়া বেতন-মজুরি পরিশোধ করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আহবান জানান।