বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ইসলামের ইতিহাসের অনেক বড় বড় বিষয় ও ঘটনাবলী আশুরার সাথে সম্পর্কিত। আর এসবের মধ্যে সবচেয়ে হৃদয়বিদারক ঘটনা হলো কারবালা প্রান্তরের নির্মম শাহাদাৎ। সেদিন ইয়াজিদ বাহিনীর বর্বরতায় রাসূল (ﷺ)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন বিন আলী (রা.)-সহ তাঁর পরিবার-পরিজন নৃশংসভাবে শাহাদাত বরণ করেন। যা ছিল বিশ্ব ইতিহাসের সবচেয়ে শোকাবহ ও হৃদয়বিদারক ঘটনা। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় এমন আত্মত্যাগ ও কোরবানীর ঘটনা ইতিহাসে নজিরবিহীন। তাই আশুরার শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অশুভ ও বাতিল শক্তির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তিনি ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ‘পবিত্র আশুরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম, নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক প্রমূখ।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে অকুতোভয় সৈনিক হয়ে ময়দানে দাঁড়িয়ে অপশক্তি ও বাতিলের বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলাই পবিত্র আশুরার প্রকৃত শিক্ষা। মূলত, আশুরার প্রতিটি ঘটনার মধ্যেই রয়েছে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের জন্য সুমহান শিক্ষা ও প্রেরণা। বস্তুত, ইসলামে জুলুমতন্ত্র, ফ্যাসিবাদ ও স্বেচ্ছাচারিতার কোন স্থান নেই। তাই সমাজ থেকে অন্যায়, অনাচার, জুলুম, নির্যাতন উৎখাত করে গণমানুষের জন্য কল্যাণকামী সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে কারবালার শাহাদাতের তামান্না নিয়ে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ার কোন বিকল্প নেই। মূলত, সকল প্রকার জুলুম-নির্যাতন ও ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে সত্য ও ন্যায় ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় সিসাঢালা প্রাচীরের মত ঐক্যবদ্ধ হওয়া সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি। তিনি হযরত হোসাইন (রা.) এর শাহাদাতের তামান্নায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে সেলিম উদ্দিন বলেন, পবিত্র আশুরা ইসলামের ইতিহাসের অনেক ঘটনার সাক্ষী। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো কারবালা ট্রাজেডি। ৬১ হিজরীতে রাসূল (ﷺ)এর প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রা.) তার পরিবার-পরিজনসহ কারবালা প্রান্তরে শাহাদাতের মাধ্যমে যে ত্যাগ ও কুরবানির নজরানা পেশ করে গেছেন তা উম্মতে মুসলিমার জন্য অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত। মূলত, যেকোন আদর্শ প্রতিষ্ঠায় ত্যাগ ও কোরবানীর কোন বিকল্প নেই। আর ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য ত্যাগের প্রয়োজন আরও অনেক বেশি। তাই ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের আরও ত্যাগ স্বীকারের মানসিকতা নিয়ে ময়দানে নিরলসভাবে কাজ করতে হবে। তিনি কারবালার শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে শান্তির বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান জানান।