করোনার ভ্যাকসিন ক্রয় পদ্ধতি, প্রাপ্তি ও বিতরণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার আহবান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ১৩ জানুয়ারি প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন,
“সরকার শুরু থেকেই করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। করোনা পরিস্থিতির শুরুতে মাস্ক ও পিপিই ক্রয়ে ভয়াবহ অনিয়ম-দুর্নীতি, ত্রাণ সামগ্রী বিতরণে অনিয়ম ও আত্মসাতের পর এখন উচ্চমূল্যে করোনার টিকা ক্রয়ের যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, তাতে অস্বচ্ছতা ও অনিয়েমের লক্ষণ বিদ্যমান। বিশ্ব বাজারে অনেক আগেই করোনার ভ্যাকসিন আগমনের খবর প্রচারিত হয়েছে। সে ক্ষেত্রে সরকার দ্রুত ভ্যাকসিন আনার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। সরকারের বিলম্বে ও উচ্চমূল্যে টিকা ক্রয়ের সিদ্ধান্ত রহস্যজনক।
একাধিক জাতীয় দৈনিকের তথ্যানুযায়ী ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে করোনা ভাইরাসের টিকা কিনতে ভারতের চেয়ে প্রায় ৪৭ শতাংশ বেশি অর্থ ব্যয় হচ্ছে বাংলাদেশের। একই টিকা যেখানে ভারত ২.৭২ ডলার বা ২৩১ টাকায় ক্রয় করছে, বাংলাদেশ তা ৪ ডলার বা ৩৪০ টাকা দরে ৪৭ শতাংশ বেশি দামে কিনছে। টিকার প্রাপ্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাণিজ্যিক চুক্তিটিকে দুই দেশের জি-টু-জি বলার চেষ্টা অনভিপ্রেত। কার স্বার্থে বা কাকে খুশি করার জন্য সরকার এত বেশি দামে টিকা কিনছে তা দেশবাসী জানতে চায়।
টিকা ক্রয়ে ঔষধ প্রশাসনের বিদ্যমান আইন অনুসরণ এবং কোন কোন নথির ভিত্তিতে ক্রয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে তা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। টিকা প্রদানের ‘ধাপ’ নিয়ে বিশেষজ্ঞগণের পরামর্শ নেয়া হয়েছে কিনা তা স্পষ্ট নয়। টিকা প্রাপ্তির অগ্রাধিকার কীভাবে নির্ধারিত হবে সে সম্পর্কে জনমনে কোনো ধারণা দেয়া হয়নি।
করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের মানুষ এমনিতেই কষ্টে আছে। অপরদিকে উচ্চমূল্যে করোনার টিকা ক্রয় এবং টিকা বিতরণের প্রক্রিয়া নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে কোনো নির্দেশনা না থাকায় দেশের মানুষ অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন।
করোনার টিকা ক্রয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করে টিকা সংরক্ষণ এবং দেশব্যাপি নাগরিকের মাঝে টিকা বিতরণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”