বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে অপরিশোধিত থাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলন করছেন গার্মেন্টস শ্রমিকরা। শ্রমিকরা অনন্যোপায় হয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গার্মেন্টস শ্রমিকদের পাওনা এবং মজুরি অপরিশোধিত থাকার ঘটনা বারবার ঘটছে। বিষয়টি বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য অশনিসংকেত। তাই গার্মেন্টস শ্রমিকদের আন্দোলনের ন্যায্য সমাধান নিশ্চিত করার জন্য মালিক-শ্রমিকের অালাপ অালোচনার ভিত্তিতে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
গতকাল বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন আয়োজিত সেক্টর দায়িত্বশীল বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন। ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমানের পরিচালনায় সেক্টর নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান,গোলাম রব্বানী,লস্কর মো: তসলিম, কবির আহমদ, মজিবুর রহমান ভূইঁয়া, আব্দুস সালাম, আলমগীর হাসান রাজু ওআব্দুল্লাহ বাছির প্রমুখ।
মিয়া গোলাম পরওয়ার আরো বলেন, দ্রব্যমূল্য, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির দাম, গাড়ি ভাড়া, বাড়ি ভাড়া বহুগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় তার সাথে সমন্বয় করে শ্রমিকের দৈনন্দিন জীবন পরিচালনা যেখানে কষ্ঠসাধ্য,সেখানে মাসের পর মাস মজুরি বকেয়া শ্রমিকদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলছে। এমতাবস্থায় শ্রমিক অসন্তোষের মুল কারণকে উপেক্ষা করে সরকার ও মালিক পক্ষের দমন পীড়নের পথে অগ্রসর হওয়া শ্রমিক অসন্তোষকে অারো বাড়িয়ে তুলতে পারে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, তাই শ্রমিকদের সাথে আলোচনার মাধ্যমেই এ সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি বলেন, তেজগাঁও, মিরপুর, আশুলিয়া, কাঁচপুর সহ শ্রমিকদের ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশের অমানবিক নির্যাতনের ঘটনা খুবই অনাকাঙ্খিত ও দুঃখজনক। সরকার, মালিক ও পুলিশ শ্রমিক আন্দোলন হলেই তার প্রকৃত কারণ না খুঁজে ষড়যন্ত্র খুঁজেন। ষড়যন্ত্র তত্ত্ব না খুঁজে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণ ও আলোচনার মাধ্যমে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ সহ তাদের ন্যায্য দাবী সমূহ বাস্তবায়ন এবং বন্ধ কারখানা খোলা সহ আহত শ্রমিকদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আহবান জানান।
তিনি বিজিএমইয়েকে উদ্দেশ্য করে বলেন গার্মেন্টসের স্বার্থ বিবেচনা শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় বিজিএমইয়ের এগিয়ে আসা কেবল মাত্র ন্যায্যতার প্রশ্নই নয় এই শিল্পখাতকে টিকিয়ে রাখার জন্যই তাদের এগিয়ে আসা অত্যাবশ্যকীয় দায়িত্ব হয়ে পড়েছে।
তিনি সেক্টর দায়িত্বশীলদের উদ্দেশ্য করে আরো বলেন, শ্রমিকরাই একটি দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। আমাদের দেশের অধিকাংশ জনগোষ্ঠী শ্রমিক।আর এই বিশাল অংশ শ্রমিক তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। অধিকার হারা শ্রমিকদের যদি আমরা বোঝাতে পারি ইসলামী শ্রমনীতির প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তাদের সত্যিকার অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব তাহলে শুধু দেশ বা সমাজ নয় বরং সারা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব। কিন্তু বর্তমানে শ্রমিকরা জানেইনা ইসলাম তাদের কি অধিকার দিয়েছে।অাগামী দিনে শ্রমিকদের অশুভ শক্তির হাত থেকে রক্ষা ও শ্রম সেক্টরে কাঙ্খিত পরিবেশ গড়ে তুলতে হলে ইসলামি শ্রমনীতির প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই। আর সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সকল সেক্টর দায়িত্বশীলদের সকল প্রতিকূলতার মাঝেও দাওয়াতি কাজ অব্যাহত রাখতে হবে।