গার্মেন্টস শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ৮ হাজার টাকার ঘোষণায় ক্ষোভ ও আক্ষেপ জানিয়ে এই ঘোষণা অমানবিক ও অন্যায্য উল্লেখ করে মজুরি পুনঃবিবেচনা করে রাষ্ট্রীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের মজুরির সঙ্গে সংগতি রেখে নিম্নতম মজুরি ১৬ হাজার টাকা ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
গতকাল রোববার দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো নির্ধারণের জন্য গঠিত মজুরি বোর্ডের সুপারিশে সরকার গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ৮ হাজার টাকা ঘোষণা করেছে। অথচ শ্রমিক সংগঠনগুলো দীর্ঘ দিন ধরে ১৬ হাজার টাকা মজুরি নির্ধারণের দাবি জানিয়ে আসছিল। সরকার মালিকদের চাপের কাছে নতি স্বীকার করে শ্রমিকদের দাবির সঙ্গে প্রহসনমূলক মজুরি ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, সরকার ৮ হাজার টাকার যে মজুরি ঘোষণা করেছে তার মধ্যে মূল মজুরি ৪১০০ টাকা। ২০১৩ সালে গার্মেন্ট শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত নিম্নতম মূল মজুরি ৩০০০ টাকা ৫ শতাংশ হারে বাৎসরিক বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে ৫ বছর পরে বিদ্যমান মূল মজুরি ৩৮২৮ টাকা। অর্থাৎ মজুরি ঘোষণায় শ্রমিকদের মূল মজুরি মাত্র ২৭২ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। যা প্রমাণ করে মজুরি বোর্ড শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৪১ নম্বর ধারায় উল্লেখিত মানদ- কিংবা আইএলও কনভেনশন ১৩১ এর মজুরির মাপকাঠিকে কোন মূল্য দেয়নি। দর কষাকষির ক্ষেত্রে সরকার মালিকদের প্রতি সহানুভূতিশীল দেখিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিকদের মজুরি সর্বনিম্ন এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় বাংলাদেশের বিদ্যমান সামাজিক প্রেক্ষাপটে এ মজুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তিনি বলেন, কমিশনের মাধ্যমে যে মজুরি নির্ধারণ করা হচ্ছে, বার্ষিক ৫ শতাংশ হারে তা বাড়ানোর বিধান রাখা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিলে মজুরি বৃদ্ধির এ হার ইতিবাচক। তবে আমাদের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট এবং অন্যান্য পেশায় বেতন বৃদ্ধির হারের তুলনায় বিদ্যমান মজুরি শ্রমিকদের নূন্যতম মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ হবে।
তিনি সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের উন্নয়ন, উৎপাদন, শ্রমিকদের কথা চিন্তা করে গার্মেন্টস শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি পুনঃবিবেচনা করুন।