বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, আধুনিক আধিপত্য বিস্তারের নতুন রূপ হলো তারা ভূখণ্ডকে ঠিক রাখবে কিন্তু দেশের আর্থসামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করবে। পানি নিয়ে যাবে, দেশের বাণিজ্যে নিয়ন্ত্রণ করবে, শিল্প-কলকারখানা সব লুট করবে- এটাই হল আধুনিক আধিপত্য বিস্তারের নতুন পদ্ধতি। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বুয়েট ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে ২০দলীয় জোট আয়োজিত স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্মরণ সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, জাতীয় পার্টির মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা আবদুল হালিম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ।
অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার বলেন, ৭টি দেশবিরোধী চুক্তি করা হয়েছে। কি আজব ব্যাপার! বলা হচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ পানি খেতে পারছে না, তাই তাদেরকে মানবিক কারণে ফেনী নদীর পানি দেয়া হয়েছে। তাহলে আমাদের তিস্তার খবর কি? আমাদের দুটি পোর্ট দিয়ে দিলেন, আমাদের উপর দিয়ে রেল চলে যাবে, এত চুক্তি আপনি করলেন আর ওখানে কোন মানবিকতার প্রশ্ন নেই? তিনি বলেন, আচ্ছা আপনি ১.৮ কিউসেক পানি দেয়ার চুক্তি করে আসলেন। এর আগে থেকে যে সীমান্তে ৩৬টি পাম্প বসিয়ে ভারত এতোকাল পানি নিয়ে যাচ্ছে সেখানে কত পানি চলে গলো সেটার হিসেব কে দেবে?
অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার বলেন, এসব দেশবিরোধী চুক্তি লক্ষ্য করার কারণে আবরারের ভেতরে বিদ্রোহ সৃষ্টি হয়েছিল। এটা হল দেশপ্রেম। জাতিসত্ত্বার পক্ষে কথা বলার জন্য বুয়েটের মতো প্রতিষ্ঠানের ছাত্র হয়ে আজকে তিনি জাতির জন্য, দেশের জন্য, দেশের পক্ষে কথা বলার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। এটাই যদি তার অপরাধ হয়, আবার বলা হচ্ছে শিবির করার সন্দেহে তাকে হত্যা করা হয়েছে। ধরে নিলাম শিবির করার অর্থ আপনারা যদি এই কথা বলেন তার মানে কি এই দাঁড়ায় যে শিবির করলেই তাকে মেরে ফেলতে হবে?
গোলাম পরওয়ার বলেন, বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠগুলোতেও এত মেধাবী ছেলেরা আসছে। এখানে আসার আগেও তো তারা এরকম ছিল না। এখানে এসেই তারা কেন পশুতে পরিণত হলো? দানবীয় চরিত্র তাদের কেন হলো? এর মানে বুঝতে হবে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার ঠিক নেই। আমাদের কারুকলাম, আমাদের সিলেবাস, আমাদের সংস্কৃতি আমাদের আদর্শ গোটা ব্যবস্থাকে ঢেলে না সাজালে এরা মানবতার পরিবর্তে পশুতে পরিণত হয়ে তারা বের হবে এর আলামত আমরা পাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমাদের সোনার ছেলেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পশুতে পরিণত হয়ে যায়। কত নিলিপ্ত হত্যাকাণ্ড! আবরার চিৎকার করছিল পানির জন্য হাহাকার করেছিল, কিন্তু তাকে পানি না দিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিজেরা ক্যান্টিনে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করেছেন।
http://www.dailynayadiganta.com/politics/448357/