বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রস্তাবিত “আমানত সুরক্ষা আইন” সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “বর্তমান সরকারের আমলে ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় এক ভয়াবহ বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাংক থেকে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করেছে। ব্যাংকের পরিচালকগণ ব্যাংক থেকে ইচ্ছামতো অর্থ লুট-পাট করছেন। সরকার ও ব্যাংক মালিকদের কারণে ব্যাংকে স্বচ্ছতা ও আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাংকগুলোতে মানুষের টাকা রাখার পরিমাণ কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক যথাযথভাবে ব্যাংকখাতকে পরিচর্যা করতে পারছেনা।
প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে বা অবসায়িত হলে সেই ব্যাংকের বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমনাতকারিরা তাদের জমানো সব টাকা ফেরত পাবেন না। আমানতকারীর নামে কোটি টাকা জমা থাকলেও তাকে মাত্র ১ লাখ টাকা ফেরৎ দেয়ার বিধান রেখে আমানত সুরক্ষা আইন-এর প্রস্তাবনা তৈরী করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ প্রস্তাবনা খুবই উদ্বেগজনক। আমানতকারীরা চরম আতঙ্কে ভুগছেন।
সরকারের ছত্রছায়ায় এবং এক শ্রেণির অর্থলোভী ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারির স্বেচ্ছাচারিতার কারণে ব্যাংকিং ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক বিপর্যয়, চরম দুর্নীতি ও অনিয়ম চলছে। নিয়ম বহির্ভূতভাবে ঋণ প্রদান করা হচ্ছে। বিগত কয়েক বছরে ব্যাংকের খেলাপী ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। ফলে গোটা ব্যাংক ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে। খেলাপী ঋণ বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে কয়েকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আমানত সুরক্ষা আইনের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক যে প্রস্তাবনা পেশ করেছে তাতে আমানতকারীরা ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলবে। তারা ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নেবেন। ব্যাংকগুলোও চরম আর্থিক সংকটে পড়বে। এতে করে গোটা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হবে। সরকার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অব্যবস্থাপনা এবং অনিয়ম দুর না করে উল্টো গ্রাহকের আমানত নষ্ট করার ব্যবস্থা করেছে।
তাই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম, দুর্নীতি বন্ধ করে আমানতকারীরা যাতে ব্যাংকের প্রতি আস্থা রাখতে পারে এবং তাদের আমানত ফিরে পাওয়ার নিশ্চয়তা পায় তার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”