বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন বৈষম্যহীন সমাজ, অর্থনৈতিক মুক্তি,জাতীয় ঐক্য,গনতন্ত্র,ভোটাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মহান স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে হবে।
গতকাল স্বাধিনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ ডেমরা অঞ্চল শ্রমিকদের নিয়ে আয়োজিত আলোচনা সভা ও শ্রমিকদের মাঝে খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এই কথা বলেন।
শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে, মহানগরী সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমানের পরিচালনায় এসময় অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান,এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,ডেমরা উওরের উপদেষ্টা আলী হোসেন,ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের দপ্তর সম্পাদক মোঃ নুরুল হক,পাঠাগার ও প্রকাশনা সম্পাদক আশরাফুল আলম ইকবাল সহ স্থানিয় ট্রেড ইউনিয়ন ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতা উত্তর শাসক-শোষকশ্রেণী ও তাদের দলসমূহের প্রতারণা, নির্মম শ্রমিক শোষণ, লুন্ঠন, দমন-পীড়ন আর হত্যা-খুনের রাজনীতির কারণে শ্রমিক-জনতার মুক্তির স্বপ্ন-আকাংখা তারা বিপর্যস্ত করেছে।
তিনি স্বাধিনতার মূল লক্ষের কথা বলতে গিয়ে বলেন, স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য এমন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা যেখানে জনগণ তাদের রায়ের মাধ্যমে শাসক নির্বাচন, সরকার গঠন বা পরিবর্তন করতে পারে। আর এই লক্ষ্য অর্জিত হলেই কেবল অন্যান্য লক্ষ্য অর্জিত হতে পারে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা, ন্যায়বিচার, সুশাসন, বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা, শোষণ-বঞ্চনার অবসান ইত্যাদি তখনই সম্ভবপর হতে পারে যখন গণতন্ত্র জবাবদিহিতামূলক শাসনের নিশ্চয়তা এবং আইনের শাষন,শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়।
আজ স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে, স্বাধীনতার এত বছরেও কি স্বাধীনতার মূল লক্ষ্যসহ অন্যান্য লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে? জনগণকে রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতায়িত করা, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও অর্থনৈতিক বিকাশ কোনোটাই কি হয়েছে? শ্রমিকরা কি আজ তাদের ন্যায্য অধিকার পেয়েছে? স্বাধীনতার লক্ষ্য, সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা নিধারণ করা হয়েছিল, তার বাস্তবায়ন কি ঘটেছে?
কিন্ত আজ অত্যান্ত দুক্ষের সাথে বলতে হয়, গণতন্ত্র এখন সোনার হরিণ। সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা ও সাম্য উধাও। জনগণ এক অমানবিক শাসনের করলে পতিত, যেখানে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের আকাল চলছে। অনিরাপত্তা, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড , শ্রমিক বঞ্চনা,ইত্যাদি যেনো আজ মানব জীবনের অনিবার্য অনুসঙ্গ হয়ে পরেছে।
তিনি আরো বলেন, আজ সরকারের প্রচারণায় দেশে উন্নয়ন,শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকারের কথার জোয়ার বয়ে গেলেও বাস্তবে শ্রমজীবী মানুষের জীবন যাত্রায় এর কোন প্রভাব পড়েনি।তাই আজ সময় এসেছে, বৈষম্যহীন সমাজ, অর্থনৈতিক মুক্তি,জাতীয় ঐক্য,গনতন্ত্র,ভোটাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মহান স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে হবে। আর এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন তার জন্মলগ্ন থেকেই অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে।