বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, দু:স্থ, বিপন্ন মানবতার সেবা বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর মহান আদর্শ। এই আদর্শের মাধ্যমে মহানবী মানুষের পাশে দাড়াতেন। তাদের দু:খ কষ্টে তাদেরকে সহানুভতি জানাতেন। ইসলামের এই সুমহান আদর্শই ইসলামের আলোই আলোকিত হয়েছিলেন। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী সেই আদর্শের ধারক ও বাহক হিসাবে বাংলাদেশের হতদরিদ্র, বিপদগ্রস্ত, দুর্যোগ, দুর্ঘটনা কবলিত, শীতার্ত ও রুগ্ন মানুষের পাশে তার সীমিত সাধ্য নিয়ে সবসময় উপস্থিত হওয়ার চেষ্টা করে। আর এই দায়িত্ব মূলত একটি রাষ্ট্রের ও একটি সরকারের। কিন্তু সরকার সর্বত্রভাবে সে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করায় আজকে একটি রাজনৈতিক দল হিসাবে ইসালামী আন্দোলনের পতাকাবাহী সংগঠন হিসাবে, একজন মুমিন ও মুসলিম হিসাবে পরস্পরের এবং সাধারণ মানুষের প্রতি সহানুভুতি রাখা ইসলাম প্রদত্ত মানবতার একটি দায়িত্ব বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উপরে। আর জামায়াতে ইসলামী সে দায়িত্ব পালন করার জন্য সব সময় সচেষ্ট থাকে। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে জাতিকে মুক্ত করতে এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে ইসলামের সুমহান আদর্শের আলোকে ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার আহবান জানিয়ে সেক্রেটারি জেনারেল বলেন. মানুষের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়ন ও মানবতার পাশে থাকার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তিনি সবাইকে এ কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে জামায়াতে ইসলামীর পাশে থাকার উদাত্ত আহ্বান জানান।
২৩ জানুয়ারি শনিবার সকালে ডুমুরিয়া-ফুলতলা এলাকায় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণকালে তিনি এ আহবান জানান। এ সময় সেক্রেটারি জেনারেলের সাথে উপস্থিত ছিলেন খুলনা উত্তর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা এমরান হোসাইন, নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ কবিরুল ইসলাম, সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মইনুল ইসলাম ও অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সেক্রেটারি এডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্লা, খানজাহান আলী থানা আমীর হাসান মাহমুদ টিটো প্রমুখ।
সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বর্তমানে দেশে একটি কর্তৃত্ববাদী ও ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতায়। এই সরকারের প্রতি জনগণের কোন সমর্থন নাই। ভোট ছাড়া তারা ক্ষমতায় এসেছে বলেই জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা এরা অনুভব করে না। জনগণের প্রতি এদের কোন দায়িত্ব ও দায়বদ্ধতা ঐ কারণেই নাই, যেহেতু এরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নয়। সেই জন্য জনগণের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে গেলে জনগণের একটি নির্বাচিত সরকার এ দেশে প্রয়োজন। তার জন্য প্রয়োজন অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমুলক একটি নির্বাচন। সরকারের উচিত জনসেবার প্রয়োজনে, জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেবার প্রয়োজনে, মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়া উচিত। সেই লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের মানুষের কাছে ইসলামের এই মানবতা ও সেবার আদর্শ নিয়ে ইসলামের পতাকাতলে সমবেত হওয়ার আহবান জানাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, এবারের শীত মওসুমে সারা বাংলাদেশে শীতার্ত, অভাবী ও দু:স্থ মানুষের পাশে জামায়াতে ইসলামী তার সাধ্যমত দাড়াবার চেষ্টা করেছে। সেই হিসাবে ডুমুরিয়া এবং ফুলতলার দরিদ্র শীতার্ত মানুষের পাশে খুবই সীমিত সামর্থ নিয়ে জামায়াতে ইসলামী প্রতিটি এলাকায় কিছু শীতবস্ত্র পোছাবার চেষ্টা করছে। আমরা আশাকরি রাষ্ট্রের উচিত জনগণের সেবায় তাদের মৌলিক চাহিদা পুরণ করা। আজকে রাষ্ট্র সে দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
সেক্রেটারি জেনারেল মানুষের এই দুর্দিনে ও দু:সময়ে সামর্থবান বিত্তবান সব মানুষকেই পাশে দাড়ানোর জন্য আহবান জানিয়ে বলেন, বহু মানুষ এখানো ফুটপথে, রাস্তায় বা রেলস্টেশনে আশ্রয়হীনভাবে খোলা আকাশের নীচে প্রচন্ড শীতের মধ্যে তারা কষ্ট পাচ্ছে। আমরা যা দিচিছ সেটাও খুব সীমিত। এটা দিয়ে যে সবার সমাধান হয়ে যাচ্ছে তাও নয়, আরো দেওয়া প্রয়োজন। আমরা চেষ্টা করবো আমাদের সাধ্যমত বিপন্ন মানুষের পাশে থাকতে।