দেশের ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ মানুষ গ্রামে বসবাস করেন। আর গ্রামের বড় অংশ মানুষ কৃষি পেশার সাথে জড়িত। এই বিশাল জনগোষ্ঠির আয়ের একমাত্র অবলম্বন কৃষি উৎপাদিত পণ্যের উপর নির্ভরশীল। অথচ এই বিশাল জনগোষ্ঠী বছরের পর বছর ধরে অর্থনৈতিক বৈষম্য ও রাষ্ট্রীয় অবহেলার শিকার। সারা বছর বাজারে চালের উচ্চ মূল্য বিরাজমান থাকলেও এই কৃষকরা ধানের ন্যায্য মূল পাচ্ছে না শুধুমাত্র সরকারের ধান সংগ্রহে অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার কারনে।
গতকাল বাংলাদেশ কৃষিজীবি শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হাসান রাজু এক যৌথ বিবৃতিতে এই কথা বলেন।
তারা বলেন, ধানের দাম না পেয়ে হতাশ কৃষকরা। বাম্পার ফলনেও হাসি নেই তাদের মুখে । প্রতি বিঘায় ধান উৎপাদনে খরচ পড়ছে ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা। আর বিঘাপ্রতি উৎপাদিত ধান বিক্রি করে পাওয়া যাচ্ছে ৬-৭ হাজার টাকা। ফলে প্রতি বিঘায় ধান উৎপাদনে কৃষকের লোকসান দাঁড়াচ্ছে প্রায় তিন হাজার টাকা। তাছাড়া, শ্রমিকের চড়া মজুরির কারণে জমি থেকে ধান কেটে ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষক। ধার-দেনা করে কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তুলতে হচ্ছে। তারপর আবার লোকসানের বোঝা।
নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশের ৮০-৮৫ ভাগ মানুষের দিনগুজরানের খবর না নিয়ে সরকার কার উন্নয়ন করছে? আমাদের উন্নয়নের গল্প শোনানো হয়। জিডিপি বৃদ্ধির গল্প শোনানো হয়।অথচ কৃষক তার ধানের ন্যায্য মূল্য পায়না।
তারা আরো বলেন, এভাবে কৃষকরা লাগাতার লোকসান গুনতে থাকলে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে। কৃষক বিপন্ন হলে কৃষি ও কৃষি ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে দেশের সকল জনগণ ও দেশ মহাসংকটে পড়বে। তাই, যেকোনও উপায়ে ধানের মূল্য পতন রোধে ধান কল মালিক ও ফাঁড়িয়ারিদের কারসাজি রোধ করে কৃষক ও কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা রক্ষা করতে হবে।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের কথা অনুযায়ী প্রভাবশালী মিলার, রাজনৈতিক নেতা ও সরকারি কর্মকর্তাদের কারণে কৃষকরা প্রকৃত দাম পাচ্ছে না। এ থেকেই বোঝা যায় ধানের দরপতনের পেছনে রাজনৈতিক সিন্ডিকেট দায়ী। তাই এসব সিন্ডিকেটদের প্রতিহত করে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা সরকারের নিকট দাবি জানাচ্ছি সুষ্ঠু নীতিমালার মাধ্যমে ন্যায্য মূল্যে সরাসরি কৃষকের নিকট হতে ধান সংগ্রহ করার জন্য। আমদানি নির্ভরতা বন্ধ করে কৃষকদের ন্যায্য মূল্য ও যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের জন্য।