গত ২৭ জুলাই ২০ দলীয় জোটের একটি শরীক দলের এক নিয়মিত সাংবাদিক সম্মেলনে সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে জামায়াতের সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকেও পাল্টা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছে।
আজ ২৮ জুলাই জামায়াতের নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, “জাতীয় ঐতিহাসিক প্রয়োজনেই ২০ দলীয় জোট গঠিত হয়েছে। যে জাতীয় প্রয়োজনকে সামনে রেখে ২০ দলীয় জোট গঠিত হয়েছে সেই প্রয়োজনীয়তা এখনো শেষ হয়ে যায়নি বরং সে প্রয়োজনীয়তা আরো বেড়েছে।
আমরা অতিসম্প্রতি লক্ষ্য করেছি যে, একটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অতিউৎসাহি কতিপয় মিডিয়ার পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ২০ দলীয় জোটের দায়িত্বশীল কোন কোন নেতা কখনো কখনো অনাকাংখিত মন্তব্য করে থাকেন। জোটের শীর্ষ নেতৃত্বের কেউ কেউ সম্প্রতি এমনও মন্তব্য করেছেন বলে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে যে, ‘কোন একটি দল একাই সরকার পরিবর্তন করে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যথেষ্ট কারো সাহায্যের প্রয়োজন নেই।’ ১৯৯১ সালের উপদাহরণ টেনে তিনি আরো বলেছেন যে, কারো সহেযাগিতা ছাড়াই জোটভুক্ত একটি দল বিজয় লাভ করেছিল।’ তিনি আসলেই এ ধরনের কোন বক্তব্য দিয়েছেন কিনা সে ব্যাপারে আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ আছে। আর যদি তিনি এ ধরনের বক্তব্য দিয়েই থাকেন তাহলে আমি তাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, ১৯৯১ সালে জামায়াত তার নিজ দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে সমর্থন দিয়ে বিএনপিকে সরকার গঠনের সুযোগ করে দিয়েছিল। দেশ ও জাতির স্বার্থে এ ধরনের সমর্থন এবং উদারতা ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা।
চারদলীয় জোটের আকার বৃদ্ধি করে পরবর্তীতে ২০ দলীয় জোট গঠনের পর স্থানীয় সরকার পর্যায়ের পৌরসভা, ইউপি নির্বাচন এবং উপজেলা পরিষদের নির্বাচন দফায় দফায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সমস্ত নির্বাচনে ২০ দলীয় জোটভুক্ত দলগুলো যারযার মতে করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। তাতে জোটের রাজনীতির কোন ক্ষতি হয়নি।
সিটি করপোরেশনের নির্বাচন ও স্থানীয় সরকারের একটি স্তরের নির্বাচন। ১২টি সিটি করপোরেশনের মধ্যে একটি মাত্র সিটিতে জামায়াত নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী দিয়েছে। বাকী সব কয়টি সিটিতে বিএনপির প্রার্থীদের জামায়াত সমর্থন দিয়েছে। এ সমর্থন দিতে গিয়ে প্রায় সব জায়গাতেই জামায়াতের নেতা-কর্মীরা জেল, জুলুম ও অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। একটি মাত্র সিটিতে জামায়াত অংশগ্রণের কারণে তারা এখন তা নিয়ে কেউ কেউ ঝড় তোলার চেষ্টা করছে।
আমরা জোটভুক্ত সকল দল এবং দায়িত্বশীল নেতৃত্বের প্রতি আন্তরিক আহ্বান জানাব যে, কারো উস্কানির শিকার হয়ে আমরা যেন এমন কোন বক্তব্য প্রদান ও আচরণ করে না বসি যা দেশ ও জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী হয়।
অতীতে সকল স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আমরা যার যার মত করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি তাতে জোটের কোন ক্ষতি হয়নি। একটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে আলাদা অংশ গ্রহণ করায় জোটের আদৌ কোন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, স্বৈরশাসনের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য কার্যকর আন্দোলন ও অর্থবহ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে সর্বাত্মক প্রয়াস চালানোর জন্য দলমত নির্বিশেষে সকলের প্রতি আমি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।”