নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রস্তাবিত ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আইন ২০২০’ ও স্বতন্ত্রভাবে ‘রাজনৈতিক দলসমূহের নিবন্ধন আইন ২০২০’ প্রণয়ন করার প্রস্তাবনার প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ২৮ আগষ্ট ২০২০ প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেনঃ
২৪ আগষ্ট নির্বাচনের ৬৯তম সভায় ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২’ রহিত করে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আইন ২০২০’ এর খসড়া প্রস্তাব প্রণয়ন করা হয়েছে। সংশোধিত প্রস্তাবে ১১টি মৌলিক ও পদ্ধতিগত বিধান বাদ দেয়া হয়েছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ৯-ই ধারার ১ ও ২ উপধারা অনুযায়ী নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তা তদন্ত করে দেখা এবং তদন্তে তা প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিলের সরাসরি ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের উপর ন্যাস্ত ছিল। যা সংশোধিত প্রস্তাবে বিলোপ করা হয়েছে। এ ধারাটি সকল রাজনৈতিক দলের সম্মতিতে আরপিওতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। সেটি কেন বিলোপ করা হচ্ছে তা দেশবাসীর বোধগম্য নয়। এর মাধ্যমে মূলত নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণভাবে অকার্যকর করে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়া নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন পরিচালনা আইনের সংস্কার এবং স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পদ ও পদবী পরিবর্তনের প্রস্তাবনা পেশ করেছেন। যা নির্বাচন কমিশনের কোনো এখতিয়ারেই নেই।
নির্বাচন কমিশন ‘রাজনৈতিক দলসমূহের নিবন্ধন আইন ২০২০’ নামে স্বতন্ত্র আইন প্রণয়নের প্রস্তাব পেশ করেছে। স্বাধীনতার পর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের যে কোনো নির্বাচনে একটি দলের অন্তত ১টি আসন অথবা ৫ শতাংশ ভোট পাওয়ার রেকর্ড অথবা একটি দলের কমপক্ষে ২১টি জেলায় বা দু’শ উপজেলায় কমিটি থাকতে হবে। পূর্ববর্তী আইনে এর যে কোনো একটি শর্ত পূরণ করলে নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্য বিবেচিত হলেও বর্তমান আইনে এর অন্তত দুটি শর্ত পূরণ করলে নিবন্ধনের যোগ্য হবেন। এটি বাস্তবায়িত হলে অনেক রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন হারানোর হুমকির সম্মুখীন হতে হবে। দেশ ধীরে ধীরে রজনীতি শূন্যের দিকে এগিয়ে যাবে।
নির্বাচন কমিশনের এ সকল প্রস্তাবনা থেকে প্রমাণিত হয় নির্বাচন কমিশন বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা চালাচ্ছেন। দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথকে চিরতরে রুদ্ধ করে দেশকে গণতন্ত্রহীন করার সর্বশেষ পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন। আমরা নির্বাচন কমিশনকে এ সকল এখতিয়ার বহির্ভুত ও অযৌক্তিক প্রস্তাবনা পেশ করা থেকে বিরত থাকার আহবান জানাচ্ছি।
দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আইন ২০২০’ বাতিল করার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”