৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে ‘পবিত্র কুরআনে ধর্মনিরপেক্ষতা আছে’ মর্মে যে বক্তব্য প্রদান করেছেন তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ৫ জুলাই এক বিবৃতি প্রদান করেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ৩ জুলাই জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনের সমাপনি বক্তব্যে ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে ‘পবিত্র কুরআনে ধর্ম নিরপেক্ষতা আছে’ মর্মে যে বক্তব্য প্রদান করেছেন আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি মহান জাতীয় সংসদে এ বক্তব্য প্রদান করে মূলত পবিত্র কুরআন মাজিদের অপব্যাখ্যা করেছেন। একজন মুসলিম হিসাবে এটা মোটেই কাম্য নয়।
বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, পবিত্র কুরআনের কোথাও ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী পবিত্র কুরআনের সূরা কাফিরুনের ভুল ব্যাখ্যা করেছেন। সূরা কাফিরুনে আল্লাহ তা’য়ালা বলেছেন, ‘তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্ম আর আমার জন্য আমার ধর্ম। অর্থাৎ তোমরা তোমাদের ধর্মের পক্ষে, আর আমি আমার ধর্মের পক্ষে। এর দ্বারা কখনই ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয়নি বা অন্য কোনো ধর্মের অনুমোদন দেয়া হয়নি। বরং তা নাকচ করা হয়েছে। মক্কার কাফিররা তাদের ধর্মের কিছু অংশ মানতে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) কে প্রস্তাব দিয়েছিল। বিনিময়ে কাফিররাও রাসূল (সা.) এর ধর্মের কিছু অংশ মানবে বলে প্রস্তাব দিয়েছিল। এ প্রেক্ষিতেই মূলত সূরা কাফিরুন নাজিল হয়েছিল। কাজেই যারা পবিত্র কুরআনের এ আয়াত দ্বারা ধর্মনিরপেক্ষতার কথা পবিত্র কুরআনে আছে বলে প্রচার করেন তাদের দাবী সঠিক নয়।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতার প্রচলিত ধারনা হল রাষ্ট্রের সাথে ধর্মের কোনো সম্পর্ক না রাখা। ধর্মকে রাষ্ট্র থেকে আলাদা রাখা অর্থাৎ রাষ্ট্রকে ধর্ম থেকে নিরপেক্ষ রাখা। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সূরা আলে ইমরানের ৮৫ নং আয়াতে বলেছেন, ‘যদি কেউ ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম তালাশ করে, তবে তা কখনই গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ কাজেই কোনো মুসলমান ধর্মের ব্যাপারে নিরপেক্ষ থাকতে পারে না। বরং তা মজবুতভাবেই ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে যথাযথভাবে পালন করতে হবে। এটাই পবিত্র কুরআনের বিধান।
তবে ধর্ম পালনে অন্য ধর্মের লোকদের উপর জবরদস্তি করা যাবেনা। আল্লাহ ঘোষণা করেছেন, ‘লা ইকরাহা ফিদ্দীন’ (দ্বীনের ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি নেই) সূরা বাকারা-২৫৬। পবিত্র কুরআনে সেটাই বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মহাগ্রন্থ আল-কুরআন দেখে নিতে পারেন।
কাজেই আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রী ভুল বক্তব্য প্রদান করেছেন এবং পবিত্র কুরআনের অপব্যাখ্যা করেছেন। আমরা তাকে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করার আহ্বান জানাচ্ছি।”