সারাদেশে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং-এ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ৬ মে এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “দেশে অব্যাহত লোডশেডিং ও বিদ্যুৎখাতে ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণে জনজীবন আজ বিপর্যস্ত। একদিকে প্রচ- গরমে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে, অপরদিকে ঘন ঘন লোডশেডিং মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে। তীব্র গরমে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বর্তমানে গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না। কিছু সময়ের জন্য আসে আবার চলে যায়। বিদ্যুতের অভাবে সেচের পাম্পগুলো অধিকাংশ সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে। ফলে পানিসেচ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কৃষক ফসল ফলাতে পারছে না। রাজধানী ঢাকার অধিকাংশ এলাকায় পানি সংকট দেখা দিয়েছে। দীর্ঘ লাইন ধরেও পাম্পগুলো থেকে খাবার পানি পাওয়া যাচ্ছে না। বিদ্যুৎ না থাকায় পাম্পগুলো পানি সরবরাহ করতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, বিগত ১৫ বছরে বিদ্যুৎখাতে সরকারের ভয়াবহ দুর্নীতি, লুটপাট ও অনিয়মের কারণে বিদ্যুৎখাতে এই নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকার দলীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত কুইক রেন্টালের মাধ্যমে বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনা করে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘২০২২-২৩ অর্থবছরে বিদ্যুতের ভাড়া বাবদ ২৬ হাজার কোটি টাকা দেয়া হয়েছে।’ বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেও বসে বসে ভাড়া নেয়ার যে চুক্তি সরকার করেছে, তা অর্থের অপচয় এবং জনস্বার্থ বিরোধী। জনস্বার্থ বিরোধী এই চুক্তি বাতিল করতে হবে। শুরু থেকেই বিশেষজ্ঞগণ কুইক রেন্টালের বিরোধিতা করলেও সরকার সেদিকে কোনো কর্ণপাত করেনি।
তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে যে পরিমাণ বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে সরকার সে তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছেনা। উৎপাদন সক্ষমতা না বাড়াতে পারলেও সরকার দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে বিগত ১৫ বছরে পাইকারি পর্যায়ে ১১ বার এবং খুচরা পর্যায়ে ১৩ বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সরকার জনগণের উপর বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়ে অর্থনৈতিক ঘাটতি পূরণের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ফলে শিল্প ও কৃষিসহ দেশের গোটা অর্থনীতির উপর চরম বিরূপ প্রভাব পড়বে। গণবিরোধী সরকার দেশের জনগণকে মেরে নিজেরা বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে।
কুইক রেন্টালের সাথে জনস্বার্থ বিরোধী চুক্তি বাতিল এবং বিদ্যুৎখাতের দুর্নীতি ও সকল প্রকার অব্যবস্থাপনা দূর করে অবিলম্বে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”