কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কয়লাবাহী ট্রাক উল্টে ঘরের ওপর পড়ে ১৩ ঘুমন্ত শ্রমিক নিহতের ঘটনা এবং নারায়নগঞ্জের শ্রমিকের উপর পুলিশের হামলা উদ্দেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারের অতিরিক্ত অবহেলা ও বিচারহীনতার কারনেই আজ শ্রমিকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
দেশের সকল মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিধান করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব অর্থাৎ কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তাহীনতার দায় রাষ্ট্র এড়াতে পারেনা। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে কার্যকরি উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। গতকাল নারায়নগঞ্জ জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন আয়োজিত দায়িত্বশীল সমাবেশে ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এই কথা বলেন, জেলা সভাপতি ড. আজগর আলীর সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারী আমীন আহমেদ মাস্তান এর পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারন সম্পাদক আতিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হাসান রাজু।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, মালিকরা শ্রমিকদের মানুষ হিসেবে গণ্যই করে না। মালিকদের এই আচরণ শিল্পকে চরম বিপদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তাহীনতা এখন সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাজরিন ও রানা প্লাজা হত্যাকাণ্ডই নয়, গত কয়েক বছর ধরে এমন অসংখ্য ঘটনায় শত শত শ্রমিক অকালে প্রাণ হারিয়েছে। বিচারহীনতার কারণে একের পর এক দুর্ঘটনা ও হত্যাকাণ্ড ঘটেই চলেছে। যখনই কোনো ঘটনা ঘটে তখন আলোচনা সমালোচনা নিয়ে কিছু দিন দেশ জুড়ে তোলপাড় হয় কিন্তু এত বড় বড় হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের উপযুক্ত বিচার না হওয়ায় শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি আজো অবহেলিত।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো বলেন, শ্রমিকদের প্রতিটি মুহূর্ত যেনো নিরাপত্তাহীনতা-শোষণ-বঞ্চনা-অসহাত্ব আর মৃত্যুর মধ্যদিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে শ্রমিক হত্যার দায়ে অভিযুক্ত খুনি মালিকদের সরকার আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে রক্ষা করে চলেছে।
মালিকরা নামমাত্র ক্ষতিপূরণ দিয়ে শ্রমিকদের বঞ্চিত করছে। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের তাদের উত্থান হচ্ছে এবং প্রশাসনিক জবাবদিহিতা না থাকায় একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে।
তিনি মালিদের উদ্দেশ্য করে বলেন, শ্রমিকের লাশের উপর দাঁড়িয়ে মুনাফা না করে, নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার মাধ্যমে শিল্পকে এগিয়ে নিতে হবে। তিনি আহত শ্রমিকদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য আহবান জানান এবং নিহত সকল শ্রমিকের আন্তার মাগফিরাত কামনা করে মহান আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনের কাছে দোয়া করেন। শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে বলেন, মহান আল্লাহ তায়া’লা তাদের এই শোক সহ্য করার তাওফিক দান করুন।