দ্বীনি জীবনের পরম প্রিয় সাথী সাঈদ ভাই আমাদের ছেড়ে মাবুদের কাছে চলে গেলেন। ইয়া রহমানুর রহীম দ্বীনি দায়িত্ব পালন অবস্হায় তোমার গোলামের এ নেক বিদায়কে তুমি শাহাদাতের মর্যাদা দান কর।
আজ দুপুরে এক অনলাইন মিটিংয়ে কুশল বিনিময় করলাম। তাঁকে বক্তব্য রাখতে অনুরোধ করলাম।বক্তব্যের সময় তাঁর প্রিয় মুখখানা কেন যেন বার বার তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিলাম। মোটা ফ্রেমের চশমার ভেতর দিয়ে তাঁর দীপ্ত চাঁহনি আমাকে চোখ ফেরাতে দিচ্ছিল না। একটি নোট খাতা হাতে ধীরে ধীরে তার স্বভাব সুলভ গাম্ভীর্যের সাথে বলে যাচ্ছিলেন। বক্তব্য শেষ করা পর্যন্ত আমি তার মুখের দিকে তাকিয়েই থাকলাম। বক্তৃতার পরই ষ্ট্রোক। সাথে সাথেই নেক জীবনের সমাপ্তি টেনে চির শান্তির নীড় আরশে আজিমের কাছে তাঁর অনন্ত যাত্রা।
কে জানতো এই দেখাই জীবন্ত সাঈদ ভাইয়ের সাথে আমার শেষ দেখা! তাও ভার্চুয়ালি!
কত বড় সৌভাগ্য আপনার, প্রিয় সাঈদ ভাই। আমীরে জামায়াত সহ সারাদেশের প্রায় চার’শ নেক সাথীদের সামনে আপনি বিদায়ী ছালাম জানিয়ে গেলেন। আপনার জন্য আমীরে জামায়াত সহ আমরা অশ্রুসিক্ত হয়ে মাবুদের কাছে শাহাদাতের মর্যাদার আকুতি জানালাম। কয় জনের এমন সৌভাগ্য হয়?
বয়সে আমার বছর খানেকের বড় হবেন সাঈদ ভাই।যশোর পশ্চিম জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির, যশোর-২ আসনের সাবেক এমপি। বড়ো মাপের আলেমে দ্বীন। মাদ্রাসার প্রিন্সিপ্যাল। একেবারেই তৃনমূলের ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান থেকে এমপি। সাধাসিধে জীবনের নিরহংকার জনতার নেতা। যাকে বলে মাটির মানুষ।
কত সাংগঠনিক কাজে আমরা একসাথে সময় কটিয়েছি। অনেক মধুর মায়াময় সম্পর্ক আমাদের। পার্লামেন্টেও দু’জন পাশাপাশি সিটে বসতাম। সে সব স্মৃতি এখন অনেক বেদনা হয়ে মনকে ভারাক্রান্ত করবে।
ইয়া রব! যে নিবেদিত গোলাম তোমার দা’য়ী হিসাবে পথে প্রান্তরে ছুটেছেন নিরন্তর ক্লান্তিহীন। জান মালের কুরবানী দিয়েছেন। দুনিয়ার চেয়ে তোমাকেই পেতে চেয়েছেন। জেল জুলুম – নির্যাতন তোমার পথেই ভোগ করেছেন। তুমি এ সবকিছু কবুল করে তার উপর সন্তুষ্ট হও। তাঁর কবরকে বেহেশতের নূর দিয়ে আলোকিত করো। জান্নাতুল ফেরদৌসের মেহমান হিসাবে কবুল করো। পরিবার স্বজনদের ‘সাবরুন জামিল’ দান করো।