“বছরে একাধিকবার বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম পরিবর্তন করা যাবে” মর্মে জাতীয় সংসদে উত্থাপিত বিলের প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ২৪ জুন এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “বছরে একাধিকবার বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম পরিবর্তনের সুযোগ রেখে ২৩ জুন জাতীয় সংসদে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) বিল-২০২০ নামে যে বিল উত্থাপিত হয়েছে তা জনস্বার্থ বিরোধী। এটি যদি সংসদে পাশ হয় তাহলে জনগণের কষ্ট ও দুর্ভোগ বৃদ্ধি পাবে ।
২০০৩ সালের আইনে কমিশনের নির্ধারিত ট্যারিফ বছরে একবারের বেশি পরিবর্তন করা যাবে না যদি না জ্বালানি মূল্যের পরিবর্তনসহ অন্য কোনো পরিবর্তন ঘটে। কিন্তু গত ২৩ জুন সংসদে উত্থাপিত আইন পাশ হলে বছরে এক বা একাধিকবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়াতে পারবে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। যা মূলত জনগণের দুর্ভোগ ছাড়া কোনো কল্যাণ বয়ে আনবে না।
বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির কারণে সরকারের পক্ষ থেকে গত মার্চ মাস থেকে বিদ্যুৎ বিল স্থগিত রেখে জুন মাসে একসাথে পরিশোধের জন্য বলা হয়। জুন মাসে কারও কারও ক্ষেত্রে দেখা যায় নিয়মিত বিদ্যুৎ বিলের চেয়ে ১০ থেকে ১২ গুন এমনকি কারও কারও ক্ষেত্রে ১৬ গুন পর্যন্ত অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল এসেছে।
বিইআরসির নিয়ম অনুযায়ী মোট সাতটি ধাপে বিদ্যুৎ বিল ধরতে হবে। যে গ্রাহক যত কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করবেন তার বিল তত কম হবে। মাসে ৫০ ইউনিট পর্যন্ত দর হবে প্রতি ইউনিট ৩ টাকা ৭৫ পয়সা। ব্যবহার ৬০০ ইউনিট ছাড়ালে প্রতি ইউনিট দাম পড়বে ১১ টাকা ৪৬ পয়সা। অথচ গত তিন মাসের ব্যতিক্রমি এই বিলে সে নিয়ম মানা হয়নি। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে অনুমান নির্ভর বিলও করা হয়েছে।
করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের মানুষ এমনিতেই অনেক সংকটের মধ্যে জীবন যাপন করছে। আর্থিক দুরবস্থার কারণে অনেকে শহর ছেড়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে গ্রামে চলে যাচ্ছে। এরই মধ্যে বিদ্যুতের ভুতুড়ে বিলে তারা ব্যাপক উদ্বেগ উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছে এবং অনেকের জন্য এ বিল পরিশোধ করা দূরহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অপরদিকে গ্রাহকের উপর বিলের বাড়তি বোঝা চাপানো হলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে পারছে না ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি)।
দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে জনগণের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে ‘এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বিল-২০২০’ জাতীয় সংসদে পাশ করা থেকে বিরত থাকার জন্য এবং যৌক্তিকভাবে বাড়তি ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের সমস্যা সমাধান করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”